৮ আগষ্ট রোববার২০২১ইং,শহীদ প্যারী মোহন আদিত্যের ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকী।একাত্তের সর্বসংহারি যুদ্ধ চলাকালীন আজকের দিনে টাঙ্গাইলের পাকুটিয়াস্থ 'সৎসঙ্গ আশ্রমে'পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও দেশীয় জল্লাদদের হাতে নির্বিবাদী-ঈশ্বরপ্রেমী মানুষটি নৃশংসভাবে শহীদ হন। উল্লেখ্য,'শহীদ প্যারী মোহন আদিত্য'শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকুল চন্দ্রের প্রবর্তিত সৎসঙ্গের সহপ্রতি ঋত্বিক, সৎসঙ্গ সংবাদের সহ-সম্পাদক,সৎসঙ্গের কার্যকরি পরিষদের সহ-সম্পাদক,সমাজ সেবক এবং সাংস্কৃতিক কর্মী ছিলেন।
অর্ধশত বছর পূর্বে এদিন,পাকিস্তানী হার্মাদরা আশ্রমে গোলাগুলি শুরু করে এবং পেট্রোল ঢেলে আশ্রম,মন্দির,অফিস,বসত বাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এবং আশ্রমে মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় ও সহযোগিতার কারণে তাঁকে প্রথমে গুলি করে এবং বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে আগুন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে নিশ্চিহৃ করে ফেলে । এদিন সমস্ত কিছু ধ্বংস প্রাপ্ত হওয়ায় শহীদ প্যারী মোহন আদিত্যর কোন স্মৃতি অথবা চিহ্ন পৃথিবীর বুকে আজ আর নেই,এমনকি তাঁর কোন ছবিও খুঁজে পাওয়া যায়না।
প্যারী মোহন আদিত্য ১৯৫৮ সালে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকুল চন্দ্রের ব্যবহৃত পাদুকা ভারতের দেওঘর থেকে বহন করে এনে আশ্রম প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু করেন। যা আজও পাকুটিয়া সৎসঙ্গ আশ্রমে প্রদর্শিত আছে। ১৯৫৭ সালে শ্রীশ্রীঠাকুরের বানী ও আদর্শ প্রচার করার জন্য প্যারী মোহন আদিত্যের যগ্ম সম্পাদনায় সৎসঙ্গ সংবাদ পত্রিকা প্রকাশিত হয়েছিল।
শহীদ সাংবাদিক প্যারী মোহন আদিত্যের প্রয়াণ দিবসে প্রাথর্না/ দোয়া ।
সনাতন ধর্মের সাধক/সমাজ সংস্কার/সমাজসেবক/সাংস্কৃতিক অঙ্গন/শিক্ষা বিস্তার/সৎসঙ্গ আশ্রম প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা/মুক্তিযুদ্ধে শহিদ সাংবাদিক প্যারী মোহন আদিত্য অগ্রণী ভূমিকা রেখেছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা ও মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় প্রদানকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এভাবে মুক্তিযুদ্ধের সময় অতিবাহিত করেন সেবার মহান মন্ত্র নিয়ে।
১৯৭১সনের ৮ আগষ্ট টাঙ্গাইলের পাকুটিয়ার সৎসঙ্গ আশ্রমে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসরদের হাতে তিনি নৃশংসভাবে নিহত হন। তিনি সব ধর্মের মিলনক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকুল চন্দ্রের প্রবর্তিত সৎসঙ্গের সহ প্রতি ্ত্বিক, সৎসঙ্গ সংবাদের সহ-সম্পাদক, সৎসঙ্গের কার্যকরী পরিষদের সদস্য, সমাজসেবক এবং সাংস্কৃতিক কর্মী ছিলেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যখন নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে, তার ঢেউ লাগে টাঙ্গাইলেও। ১৯৭১ সালের ৮ আগষ্ট পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা আশ্রমে গোলাগুলি শুরু করে এবং প্রেট্রোল ঢেলে দিয়ে আশ্রমের মন্দির,অফিস,বসত বাড়ি সহ সমস্ত কিছু আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দেয়। সেল নিক্ষেপের আঘাতে মন্দির ধ্বংস করে দেয়। আর এই আশ্রমে প্রতিষ্ঠিত মুক্তিযোদ্ধাদের রণাঙ্গণের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিসেবে তাকে টেনে হিচড়ে গুলি করে তারপর বেয়নেটের মাধ্যমে খুচিয়ে খুচিয়ে হত্যা করে।
প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে ৮ জুলাই২০২১ইং রোজ রবিবার বাদ-আছর শহীদ সাংবাদি প্যারী মোহন আদিত্যের স্বরণে গাজীপুর জেলা প্রেসক্লাবের উদ্দ্যোগে দোয়ার আয়োজন করা হয়।
জেলা প্রেসক্লাবের পক্ষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন,আমজাদ হোসেন মুকুল,সভাপতি,গাজীপুর জেলা প্রেসক্লাব,বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা: হাফিজুর রহমান,বীর মুক্তিযোদ্ধা,আব্দুল হামিদ ও শহীদ রাবেয়া খাতুন এর সন্তান শাহ মোহাম্মদ রায়হান বারী,ফাউন্ডার ও সভাপতি বাংলাদেশ ইউনেস্কো ক্লাব,রংপুর ডিভিশনসহ আরও বক্তব্য রাখেন সিনিয়র সাংবাদিকবৃন্দ ।
শহিদ বুদ্ধিজীবী প্যারী মোহন আদিত্যের ছবি এবং তারঁ কোন স্মৃতি চিহৃ সংরক্ষন করা সম্ভব হয়নি। শহিদ বুদ্ধিজীবী প্যারী মোহন আদিত্য ব্যক্তি জীবনে পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমানে বাংলাদেশ) এর সৎসঙ্গের সহ-সম্পাদক,সৎসঙ্গের মুখপাত্র,সৎসঙ্গ সংবাদ পত্রিকার সহ-সম্পাদক হিসেবে নিজেকে সাংবাদিকতার মতো বস্তুনিষ্ঠ মহান পেশায় নিয়োজিত করেন। তিনি সৎসঙ্গের প্রাণপুরুষ যুগ পুরুষোত্তম শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকুল চন্দ্রের ভাবাদর্শের একজন সহ-প্রতি ঋত্বিক ছিলেন। যার মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে “বাঁচা বাড়ার” মন্ত্র হিসেবে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকুল চন্দ্রের আদর্শ প্রচার করতেন এবং জনহিতকর কল্যাণে মানুষের জন্য কাজ করতেন। তিনি একজন নাট্য/সাংস্কৃতিক ব্যক্তি ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা ও মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় প্রদানকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এভাবে মুক্তিযুদ্ধের সময় অতিবাহিত করেন সেবার মহান মন্ত্র নিয়ে। ১৯৭১ সালের ৮ আগষ্ট পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা আশ্রমে গোলাগুলি শুরু করে এবং প্রেট্রোল ঢেলে দিয়ে আশ্রমের মন্দির,অফিস,বসত বাড়ি সহ সমস্ত কিছু আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দেয়। সেল নিক্ষেপের আঘাতে মন্দির ধ্বংস করে দেয়। আর এই আশ্রমে প্রতিষ্ঠিত মুক্তিযোদ্ধাদের রণাঙ্গণের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিসেবে তাকে টেনে হিচড়ে গুলি করে তারপর বেয়নেটের মাধ্যমে খুচিয়ে খুচিয়ে হত্যা করে।
সৎসঙ্গ বাংলাদেশের সহ-সম্পাদক সুব্রত আদিত্য জানান যে,শহিদ বুদ্ধিজীবী প্যারী মোহন আদিত্য এতবড় দায়িত্ব পালনকারী হিসেবে দেশ মাতৃকার টানে নিজেকে উৎসর্গ করলেও মানব জীবনের দুর্লভ প্রাণ বলিদান করলেন মহান মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতার জন্য। আশ্রমের মন্দির,বসত বাড়ি সহ সমস্ত কিছু ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য তারঁ কোন স্মৃতি চিহৃ সংরক্ষন করা সম্ভব হয়নি।
শহীদ রাবেয়া খাতুন এর সন্তান শাহ মোহাম্মদ রায়হান বারী,ফাউন্ডার ও সভাপতি বাংলাদেশ ইউনেস্কো ক্লাব,রংপুর ডিভিশন বলেন,প্যারী মোহন আদিত্য (লেখক,সাংবাদিক ও সংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব) সৎসঙ্গের জন্য যে মেধা,শ্রম,নিষ্ঠা ও একাগ্রতা প্রয়োজন তার পরিপূর্ণ অধিকারী ছিলেন। স্বাধীনতা বিদ্ধেষী বাংলা ভাষা ও সাংস্কৃতির শত্রুরা তাঁকে হত্যার চক্রান্ত হত্যা করে।
শহিদ বুদ্ধিজীবী প্যারী মোহন আদিত্যের সন্তান নটো কিশোর আদিত্য জানান,স্থানীয় দেশপ্রেমীক জনগণ পাকুটিয়ায় এই মহান আত্মত্যাগী সমাজ সংগঠক সাংস্কৃতিক কর্মী এবং সাহিত্য প্রেমী শহীদ প্যারী মোহন আদিত্যের নামে সড়কের নামকরণ করেন। আশ্রমের মন্দির,বসত বাড়ি সহ সমস্ত কিছু ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য বাবার কোন ছবি এবং তারঁ কোন স্মৃতি চিহৃ সংরক্ষন করা সম্ভব হয়নি। রশীদ হায়দার সম্পাদিত,স্মৃতি: ১৯৭১ বাংলা একাডেমী কর্তৃক প্রকাশিত গ্রন্থে তাঁর বুদ্ধিদীপ্ত চিন্তা চেতনার মুক্তিযুদ্ধ কালীন তাঁর ভূমিকা অপরিসীম বীরত্বের কথা আলোকপাত হলেও তাঁর কোন ছবি না থাকায় স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশিত করা সম্ভব হয়নি।